১০ মামলার আসামী (৮টি ডাকাতি ও ২টি অস্ত্র মামলা) আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার কোরবান আলী জসিম কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (২৪এপ্রিল) রাতে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-১১,সিপিসি-৩,এর সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার কোরবান আলী জসিম (৩২) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়েনের ৫নম্বর ওয়ার্ডের নুর নবীর ছেলে।
র্যাব-১১,সিপিসি-৩,নোয়াখালীর কোম্পানী কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) মিঠুন কুমার কুণ্ডু এসব তথ্য নিশ্চিত করে তিনি জানান,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী এর আভিযানিক দল নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার মামলা নং-১২ এর তদন্তে সন্দিগ্ধ আন্তজেলা ডাকাত দলের নেতা আসামী কোরবান আলী জসিম কে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহারে জানা যায় যে,মামলার বাদী মো.জাহাঙ্গীর আলম (৫২) জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বাসিন্দা। বিগত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত আড়াই টার সময় সূত্রোক্ত মামলার তদন্তে সন্দিগ্ধ আসামী কোরবান আলী জসিম (৩২) সহ অপরাপর অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত বাদীর বসত ঘরের দক্ষিণ মুখী ও পশ্চিম মুখী দরজা লোহার কোরাবাড়ী, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভেঙ্গে বসত ঘরে প্রবেশ করে।
দরজা খোলার শব্দ শুনে বাদীর স্ত্রী রাশিদা আক্তার (৩৮) এবং বাদীর ছেলে হাফসা জাহান দিপু (১৭) এর ঘুম ভেঙে গেলে ৪/৫ জন ডাকাত বাদীর বসত ঘরে প্রবেশ করে কিছু বুঝে উঠার আগেই বাদীর ছেলে কে রশি দিয়ে বেধে ফেলে। এবং বাদীর স্ত্রীকে ধমক দিয়ে খাটের উপর বসিয়ে রাখে।
ডাকাতরা বাদী সহ তার পরিবারের সদস্যদের কে টাকা ও স্বর্ণালংকার কোথায় আছে বের করে দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে।
ডাকাতরা বলে “যদি কেউ চিল্লাচিল্লি বা আওয়াজ করো মাইরা ফালামু। ডাকাতরা স্টিলের আলামারী খুলে আলমারীতে থাকা ২ভরি ৬আনা স্বর্ণালংকার (মূল্য ৩,৩৮,০০০ টাকা) ও আলমারীর ড্রয়ারে নগদ ৬০,০০০ টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
ঘটনার সময় আরো ৪ জন ঘরের দুই দরজায় পাহারা দেয় এবং ২/৩ জন ডাকাত ঘরে বাইরে অবস্থান করে। ডাকাতদের মুখ লাল কাপড় দিয়ে বাধা ছিল।
ডাকাতরা নোয়াখালীর স্থানীয় ভাষায় কথা বলছিল। ডাকাতদের বয়স ২৫থেকে ৪০বছরের মধ্যে। পরনে বিভিন্ন রংয়ের লুঙ্গি ও গায়ে গেঞ্জি ছিল, গায়ের রং শ্যামলা, উচ্চতা আনুমানিক ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি কারো কারো ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি হবে।
ডাকাতরা অনুমানিক রাত ২.৩০ মিনিট থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত বাদীর বাড়িতে ডাকাতি করে বাদীর বাড়ি হতে বের হয়ে বাদীর বাড়ির উত্তর দিক দিয়ে পায়ে হেঁটে চলে যায়।
বাদী ও বাদীর পরিবারের কেউ ডাকাতদের চিনতে পারেনি। বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে আশপাশের লোক এসে ঘটনা দেখে এবং শোনে।
বাদী অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন কে আসামী করে এজাহার দায়ের করলে সূত্রে বর্ণিত মামলাটি রুজু হয়।
মামলাটি রুজু হওয়ার পর হতে অজ্ঞাতনামা ডাকাতরা গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে পলাতক ছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার অভিযানের প্রেক্ষিতে র্যাব এর আভিযানিক দল উক্ত মামলার অজ্ঞাতনামা ও তদন্তে সন্দিগ্ধ পলাতক ডাকাতদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে।
পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব এর যৌথ আভিযানিক দল কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন বাংলাবাজার সংলগ্ন মুছাপুর সংলগ্ন আনোয়ার হোসেন টুটুলের দোকানের সামনের পাকা রাস্তার উপর থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে অভিযান পরিচালনা করে মামলার তদন্তে সন্দিগ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের নেতা আসামী কোরবান আলী জসিম কে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করে এবং ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোম্পানীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।