নোয়াখালী জেলা কারাগার ১৯৬৭ সালে স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু বিগত ৫৮ বছরে উল্লেখযোগ্য কোন সংস্কার বা আধুনিকায়ন হয়নি।
বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই কারাগারটি পানিতে ডুবে যায়, চারপাশে পানি জমে থাকায় হাজতি ও কারারক্ষীদের দূরভোগ পোহাতে হয়।
এ ছাড়া কারাগারে বন্দির সংখ্যা ধারন ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ। কারা সূত্রে জানা গেছে, পুরাতন অবকাঠামো ও সড়ক সংস্কারের অভাবে বর্ষায় প্রধান প্রবেশপথ ডুবে যায়। নিচু ভূমি ও দীর্ঘদিন ধরে বিকল থাকা ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বৃষ্টির পানি কারাগারে প্রবেশ করে।
এতে কারারক্ষীদের চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাছাড়া কারাগারের চারপাশে নিচু পেরিমিটার ওয়াল এবং অপ্রতুল বাউন্ডারি ওয়াল থাকায় বন্দিদের পালানোর শঙ্কা রয়েছে।
নোয়াখালী জেলা কারাগার প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৭ সালে মাইজদি কোর্ট এলাকায়, পরে ১৯৭২ সালে বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তর করা হয়। মোট জমি ৩৬ একর, যার মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ৮.৫০ একর এবং বাইরে ২৭.৫০ একর। ৫৩ বছরে কিছু রাস্তা ও অবকাঠামো নির্মাণ হলেও অনেক ভবন সংস্কারহীন থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কারাগারে ৮২৩ জন বন্দী রয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১ জন মহিলাসহ ৬ জন, মহিলা ৩ জনসহ ৫৭ জন বিনাশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এবং মহিলা ১ জনসহ ৯৭ জন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি রয়েছেন। খাবারের মান সমন্বিত হলেও অনেক ভবনে ফাটল, বেরিয়ে পড়েছে রড, খসে পড়েছে পলেস্তার, সাক্ষাতের ঘরটিও জরাজীর্ণ।
স্থানীয়দেয় সাথে কথা বলে জানা যায়- “সামান্য বৃষ্টিতেই প্রধান সড়ক ডুবে যায়। জলাবদ্ধতার কারণে বন্দিদের সাথে স্বজনদের সাক্ষাত করতে সমস্যা হয়। ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল এবং ছাদের পলেস্তার খসে পড়ার অবস্থা। কারাগারটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।
জেল সুপার আবদুল বারেক বলেন, কারাগারের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণ করা জরুরী। নিচু ভূমি ও নির্মাণ ত্রুটির কারণে বর্ষায় পানি জমে যায়। পুনর্নির্মাণের জন্য ৩৫০ কোটি টাকার প্রকল্প জমা আছে। এটি অনুমোদিত হলে দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান সম্ভব।
নোয়াখালী জেলা কারাগারের কর্মকর্তা মোহাম্মাদ ফরিদুর রহমান রুবেল জানান, বৃষ্টি হলে খাদ্য সরবরাহ, চিকিৎসা ও চলাচলসহ সব কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। গণপূর্ত বিভাগকে বহুবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গণপূর্ত বিভাগের নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.কামরুল হাছান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। আমরা বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কারাগার পুনর্নির্মাণ ও আধুনিকায়নের প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সমস্যার সমাধান হবে।